পবিত্র হজের সময় সৌদি আরবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকে। এ সময় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রদের অনেকেই হাজিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা ও সেবা করেন। তাঁদের একজন চট্টগ্রামের বাঁশখালীর মোহাম্মদ শোয়াইব উদ্দিন। শিক্ষা বৃত্তি নিয়ে তিনি মক্কার উম্মুল কোরা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাদিস বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘হাজিদের খেদমত করার সুযোগ পাচ্ছি, এটাই বড় কথা।’
শোয়াইব, আতিকুর রহমান, কাউসার খলিল এবং আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা পবিত্র হজের সময় পড়াশোনার পাশাপাশি হজ মন্ত্রণালয়, হজ মিশন ও আইটি সার্ভিসের মাধ্যমে হাজিদের নানা রকম সহযোগিতা করেন। দোভাষীর কাজও করেন কেউ কেউ। তাঁরা মূলত স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করেন। তবে কেউ কেউ পারিশ্রমিকও পান।
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন ও মাসুম বিল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি হাজিদের ইসলামি বইপুস্তক, খেজুর, পোশাক উপহার দেন। আরেক শিক্ষার্থী সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে গবেষণা কেন্দ্র আছে। হাজিদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে জরিপ করা হয়, যা ভবিষ্যতে হাজিদের জন্য সহায়ক হয়।’
উম্মুল কোরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস মক্কার আরাফাত এলাকায়। এখানে ২৮টি বিভাগ রয়েছে। সব বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়। পাশাপাশি এমফিল, পিএইচডি ও উচ্চতর গবেষণার সুযোগও রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বের ১১০টি দেশের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। এখানকার শিক্ষার্থী সগির উদ্দিন বলেন, ‘মসজিদুল হারামের (কাবা শরিফ) বেশির ভাগ ইমাম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
আবদুর রহমান সুদাইস, সুরাইম, ফয়সাল গাজাওই, খালেদ গামিদির মতো শিক্ষকদের সান্নিধ্য পাচ্ছি আমরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশও চমৎকার।’ তিনি বলেন, এখানে শিক্ষার্থীদের মাসিক বৃত্তি হিসেবে ৮৫০ সৌদি রিয়াল দেওয়া হয়। বিদেশি ছাত্ররা ভালো ফল করলে বছর শেষে বৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে। ছাত্রদের বছরে তিন মাসের ছুটি ও বিমানের টিকিট দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসাসুবিধা, যাতায়াত ভাড়ার সুবিধাও দেওয়া হয়। বাংলাদেশি ছাত্ররা ভালো ফল করছেন। ৩৭ জন বাংলাদেশি ছাত্র মক্কা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।
সূত্রঃ প্রথম আলো
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন