LATEST UPDATE

শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

এবার ঈদের ছুটিতে টেকনাফ ঘুরে আসতে পারেন!


কক্সবাজার কিংবা সেন্ট মার্টিনে সারা বছরই পর্যটকদের ঢল থাকে। তবে এমন অনেকে আছেন, যারা কক্সবাজার গিয়েও টেকনাফ না বেড়িয়েই চলে আসেন। অথচ নাফ নদী, জলিলের দিয়া, নেটং পাহাড়, কুদুম গুহা আর সাদা বালুর নিরিবিলি সৈকতের হাতছানি এড়ানো ভ্রমণপিপাসুদের জন্য সত্যি কঠিন। এবার ঈদের ছুটিতে তাই টেকনাফ ঘুরে আসতেই পারেন।
সমুদ্রসৈকত টেকনাফ: পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের শেষ সীমানা হচ্ছে টেকনাফ। এবার সৈকতে হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। এখানে সেন্ট্রাল রিসোর্ট হোটেলে চাইলে রাত যাপন করা যায়। হোটেল লবি থেকে দেখা যাবে সাগরসৈকত। টেকনাফ পুরোনো বাসস্টেশন থেকে রিকশা, অটোরিকশা ও চাঁদের গাড়িযোগে (জিপ) সমুদ্রসৈকতে যাওয়া যায়। জিরো পয়েন্ট থেকে চার কিলোমিটার দূরে টেকনাফ সমুদ্রসৈকত। সেখানে গিয়ে দেখতে পাবেন সারিবদ্ধ লাল কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, জেলেদের মাছ ধরার অপরূপ দৃশ্য। টেকনাফ সৈকত পাড় থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার উত্তরে শীলখালী নামের স্থানে গেলে দেখতে পাবেন বিশাল আকৃতির সব পাথর। টেকনাফ থেকে নয় কিলোমিটার দক্ষিণ শাহপরীর দ্বীপের ঘোলাপাড়ায় ডোবাচরও দেখে আসা যায়। শীত মৌসুমে এখানে বিপুলসংখ্যক অতিথি পাখির সমাগম ঘটে।

 মথিনের কূপ:
টেকনাফ বাস টার্মিনাল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে পুলিশ কোয়ার্টার প্রাঙ্গণে অবস্থিত ঐতিহাসিক মাথিনের কূপ। কলকাতার পুলিশ কর্মকর্তা ধীরাজ ভট্টাচার্যের সঙ্গে টেকনাফের জমিদার ওয়ানথিনের একমাত্র কন্যা মাথিনের নিবিড় প্রেমের সাক্ষী এই কূপ। এই কূপ থেকেই পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে ধীরাজের সঙ্গে দেখা হয় মাথিনের।
নেটং পাহাড়: শহর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে নেটং পাহাড়ে গিয়ে বন্য সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। এই পাহাড়ে হাতি, হরিণ, বানর, ভুতুম প্যাঁচা, পাহাড়ি মুরগি, ময়ূর, মেছো বাঘসহ কয়েক প্রজাতির পশুপাখির বসবাস। নেটং পাহাড়ে যাওয়ার পথে পড়বে পাহাড়ের গা বেয়ে নামা ঝিরি-ঝরনা। পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে দেখা যায় পাহাড় সারি আর নাফ নদীর অপরূপ দৃশ্য। এই পাহাড়ের খুব কাছেই রয়েছে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় তৈরি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বাংকার ও ব্রিটিশ স্থাপনা টি অ্যান্ড টি ভবন। এখানে সরু পাহাড়ি পথ ধরে হেঁটে প্রাচীন বৌদ্ধমন্দিরও দেখে আসতে পারেন। নেটং পাহাড়ের প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে মোছনী নামক স্থানে প্রান্তিক লেক ও ন্যাচারাল পার্ক অবস্থিত। হাতে সময় থাকলে একই যাত্রায় প্রান্তিক লেক ও ন্যাচারাল পার্ক ঘুরে আসতে পারেন। পার্কের পাশেই একটি নিরিবিলি হ্রদের তীরে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে চলে আসতে পারেন। তবে এ জায়গায় দল বেঁধে যাওয়াই ভালো। পার্কে প্রবেশ ফি ১০ টাকা।


নাফ নদী ও জলিলের দিয়া:
যেকোনো এক বিকেলে বেরিয়ে পড়ুন নাফ নদীতে সময় কাটাতে। এ সময় নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকা দিয়ে হাঁটতে বেশ ভালোই লাগবে। নাফ নদীর মাঝখানে টেকনাফ স্থলবন্দরের পূর্ব পাশে জলিলের দিয়ার অবস্থান। যুগ যুগ ধরে টেকনাফের কিছু লোক ওই দ্বীপে চিংড়ি ও লবণের চাষাবাদ করে আসছিল। বর্তমানে সেখানে গড়ে তোলা হচ্ছে বিশেষ পর্যটন এলাকা। টেকনাফ সদর থেকে নাফ নদীর দূরত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার। অনেকে শহরের দিকে না গিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত পর্যটন হোটেল নেটং, সড়ক ও জনপথ বিভাগের ডাকবাংলো ও বন বিভাগের বাংলোয় রাতযাপন করেন।


কুদুম গুহা:
কক্সবাজার থেকে টেকনাফ আসার পথে হোয়াইক্যং। হোয়াংক্যংয়ের পাহাড়ে কুদুম গুহার অবস্থান। হোয়াইক্যং স্টেশন থেকে পশ্চিম দিকে শামলাপুর যাওয়ার পথেই পড়বে এটি। সেখানে যেতে হলে সহযোগিতা নিতে পারেন হোয়াইক্যং বন বিভাগের বন প্রহরীদের। যেতে হবে হেঁটে। সময় লাগবে প্রায় এক ঘণ্টা।
কীভাবে যাবেন টেকনাফ: চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন, বহদ্দারহাট ও সিনেমা প্যালেস থেকে সকাল ছয়টা থেকে রাত তিনটা পর্যন্ত সৌদিয়া, এস আলম বাস চলাচল করে। কক্সবাজার এসে লিংক রোড ও জেলা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ছয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত টেকনাফের বাস চলাচল করে। কক্সবাজার থেকে টেকনাফ আসতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা।

Share this:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Copyright © 2014 VIGOROUS MEDIA. Designed by NaYeM | Distributed By Gooyaabi Templates