LATEST UPDATE

বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৬

শীত তাড়াতে রং এবং ঘরের সাঁজ!


চারদিকে সবকিছুই শুষ্ক, রুক্ষ। শীতকালের আবহাওয়া তো এমনই, সেটা পাল্টানোর দরকার নেই। তবে অন্দরে সাজসজ্জার কিছু পরিবর্তন করে বাড়াতে পারেন উজ্জ্বলতা, সেই সঙ্গে ঘরও উষ্ণ হয়ে উঠবে৷ এর জন্য অবশ্য দেয়ালের রং পাল্টে ফেলতে হবে না৷ মজার ব্যাপার হলো, ঘরে উষ্ণ ভাব আনতে হিটারের প্রয়োজন নেই। কয়েকটি রং আর বাতির আলো-আঁধারির খেলাতেই ঘরে উষ্ণ একটা ভাব চলে আসবে। অন্দরসজ্জাবিদেরা এমনটাই জানালেন।

ঘরের টুকিটাকি জিনিসপত্র বদলেই অন্দরের সাজসজ্জায় পরিবর্তন আনা যেতে পারে—বললেন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গুলসান নাসরিন চৌধুরী। লাল, কমলা, হলুদ এই তিনটি রঙের উপস্থিতিতেই ঘরের শীতল ভাবটি বিদায় নেবে। পর্দা, বিছানা ও ডিভানের চাদর, সোফার কভার, কুশন, খাবার ঘরের টেবিল ক্লথ, রানার বদলানো তো খুব কঠিন নয়। সব যে একসঙ্গে পাল্টে ফেলতে হবে, তা-ও নয়। শুধু পর্দা, বিছানার চাদর, সোফার ব্যাগ, টেবিলের রানার, চেয়ারের কভার এসব জায়গাতে উজ্জ্বল এই তিনটি রঙের কাপড় ব্যবহার করা যেতে পারে।

গুলসান নাসরিন চৌধুরীর পরামর্শ—এখনকার আবহাওয়ায় একটু ভারী সিনথেটিক কাপড়ের পর্দাই ভালো। কারণ, শীতকালে মোটা কাপড় সহজে শুকাতে চায় না, তবে সিনথেটিক কাপড় খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শুকিয়ে যায়। তা ছাড়া ভারী কাপড় ভেদ করে বাইরের হিম বাতাস এবং ধুলাবালিও ভেতরে ঢুকতে পারে না। শীতকালে জানালায় দুই স্তরের পর্দা ব্যবহার করলে ভালো। ভেতরের দিকে নেটের পর্দা দিয়ে, ওপরে ভারী আরেকটি পর্দা রাখতে পারেন। তাহলে দিনের বেলায় ভারী পর্দাটি সরিয়ে নিলেই শীতের মিষ্টি রোদ ঘরে ঢুকে পড়বে।
অন্দরসজ্জাবিদ সাবিহা কুমু জানিয়েছেন, ক্যানভাস, পাহাড়ি সুতি কাপড়, পাট এবং সিনথেটিক উপাদানের পর্দা এ সময় বেশ উপযোগী।
এবার আসা যাক বসার ঘরের সাজে। সোফার কভার যদি হয় চাপা সাদা তাহলে লাল রঙের হতে পারে সোফার ব্যাগগুলো। আবার সোফার কভার একরঙা হলে কুশন হতে পারে ছাপা নকশার। লাল, হলুদ, কমলা এই রংগুলোর সঙ্গে চাপা সাদার সমন্বয় খুব ভালো মানায়। অবশ্য এই তিনটি রঙের মধ্যে থেকে কোনটি বেছে নেবেন, তা আপনার ঘরের দেয়াল ও আসবারের রঙের ওপর নির্ভর করবে। ঋতুভেদে পুরো বাড়ির রং তো আর বদলে ফেলা যায় না, তবে বিশেষজ্ঞরা এমন কিছু রঙের কথা জানিয়েছেন যা সারা বছরই চোখকে আরাম দেবে। যেমন: নীল, সবুজাভ, বাদামি।
মাঝখানের চেয়ারে কভারের ব্যবহারের চল উঠে গিয়েছিল৷ অন্দরসজ্জায় এখন আবার সেটা ফিরে আসছে বলে জানালেন গুলসান নাসরিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘রং মিলিয়ে টেবিল ক্লথ, চেয়ার কভার, ম্যাট ও রানার ব্যবহার করলে ভালো দেখাবে।’

শোয়ার ঘরের জন্য বেড কভার হিসেবে বেছে নিতে পারেন রানি গোলাপি, লাল, সোনালি, হলুদ বা চকলেট রং। এর সঙ্গে থাকতে পারে কালো বা ছাই রঙের মিশেল। অন্য সময় যে রঙের চাদরগুলো বেশি চোখে লাগত তা এখন অনায়াসে বিছিয়ে নিতে পারেন—জানালেন সাবিহা কুমু। শোয়ার ঘরের পর্দাটা হতে পারে গাঢ় নীল এবং চাপা সাদার সমন্বয়ে। হতে পারে সোনালি রঙের ব্যবহার, এই রঙের সুবিধা হলো গরম বা শীত যেকোনো সময়েই মানিয়ে যায়।


বাড়ির কিছু জায়গায় শীতকালে কার্পেটিং করা যেতে পারে। বসার ঘর, শোয়ার ঘর কিংবা বাড়িরযেসব জায়গায় বেশি সময় কাটানো হয় সেই জায়গাগুলোতে পুরো মেঝেজুড়ে বা কিছু অংশে কার্পেট পাততে পারেন।
সন্ধ্যা নেমে এলে হালকা হলদে বাতি বা ওয়ার্ম লাইট জ্বালিয়েও ঘরটাকে উষ্ণ করে তোলা সম্ভব। ঘরের কোনায় তিন স্তরের ল্যাম্প শেড রাখা যেতে পারে। এটি সিলিং থেকে ঝুলন্ত হতে পারে, আবার টেবিল ল্যাম্পও হতে পারে। এটি নির্ভর করছে আপনার ঘরের আকার এবং অন্য আসবাবের ধরনের ওপর।
সাবিহা কুমু বলেন, কেবল বৈদ্যুতিক বাতি দিয়ে নয়, রং-বেরঙের মোম জ্বালিয়েও ঘরের ভেতরে উষ্ণ একটা ভাব নিয়ে আসতে পারেন। স্বচ্ছ কাচের বোল বা মাটির বড় সরায় পানি ভরে তার ওপর ফুল অথবা ফুলের পাপড়ি আর সঙ্গে কয়েকটি মোম জ্বালিয়ে ভাসিয়ে দিন। ঘরের এক কোণে বা মাঝ বরাবর রেখে দিলে তা দেখতেও নান্দনিক হবে আর ঘরও থাকবে খানিকটা গরম।
আর শীতের এই সময়টায় প্রচুর রঙিন ফুল পাওয়া যায়; তা গুচ্ছ করে সাজিয়ে ফুলদানিতে রাখলেও কিন্তু ঘরের উজ্জ্বলতা বাড়ে, অন্দরে ফিরে আসে প্রাণ। শীতের রুক্ষতা কাটিয়ে ঘরে চলে আসবে বসন্ত।

সূত্রঃ প্রথম আলো

Share this:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Copyright © 2014 VIGOROUS MEDIA. Designed by NaYeM | Distributed By Gooyaabi Templates